জীবনানন্দ দাশ প্রকৃতি নিয়ে অসংখ্য কবিতা লিখেছেন। জীবনানন্দ দাশের প্রকৃতি নিয়ে কবিতার মধ্যে “সমুদ্রের জলে আমি” উল্লেখযোগ্য। সমুদ্রের জলে আমি কবিতাটি জীবনানন্দ দাশের “রূপসী বাংলা” কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত।
সমুদ্রের জলে আমি – জীবনানন্দ দাশ
সমুদ্রের জলে আমি দেহ ধুয়ে চেয়ে থাকি নক্ষত্রের আকাশের পানে
চারিদিকে অন্ধকার : নারীর মতো হাত, কালো চোখ, ম্লান চুল ঝরে
যতদূর চোখ যায় নীলজল হৃষ্ট মরালের মতো কলরব করে
রাত্রিরে ডাকিতে চায় – বুকে তার, প্রেমমূঢ় পুরুষের মতন আহ্বানে
পৃথিবীর কত প্রেম শেষ হ’ল – তবু এই সমুদ্রের আকাঙ্ক্ষার গানে
বাধা নাই, ভয় নাই, ক্লান্তি নাই, অশ্রু নাই- মালাবার ঢেউয়ের ভিতরে
চারিদিকে নীল নারিকেল বন সোনালি ফুলের গন্ধে, বিস্ময়ের ভরে
জানে তাহা- কত দিন থেকে ওই মলয়ালী আর তার শিশু তাহা জানে
জানি না মান্দ্রাজ নাকি এই দেশ? জানি না মলয় নাকি? কিংবা মালাবার?
জানি না এ পৃথিবীর কোন পথ- কোন ভাষা কোন মুখে এখানে বাতাসে
জানি না যৌবন কবে শেষ হয়ে গেছে কোন পৃথিবীর ধুলোতে আমার
তবুও আমার প্রাণ তামিলের কিশোরের মতো ওই কিশোরীর পাশে
আবার নতুন জন্ম পায় আজ; কেউ নাই অন্ধকারে কবেকার ঘাসে
কত যে মউরি কই ঝ’রে গেছে- চারিদিকে ফুটে সব উঠিছে আবার।
আরও পড়ুন- জীবনানন্দ দাশের অন্যান্য কবিতা