in

রচনা: সমাজ গঠনে ছাত্রসমাজের ভূমিকা 

সমাজ উন্নয়নে ছাত্রসমাজের ভূমিকা 

রচনা: সমাজ গঠনে ছাত্রসমাজের ভূমিকা 
রচনা: সমাজ গঠনে ছাত্রসমাজের ভূমিকা 

একটি দেশের ছাত্রসমাজ সেই দেশের ভবিষ্যৎ। এই একবিংশ শতাব্দীতে জ্ঞানের চেয়ে বড় অস্ত্র আর কিছু নেই। তাই দেশ ও সমাজ গঠনে ছাত্রসমাজের ভূমিকা অনস্বীকার্য। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সমাজ উন্নয়নে ছাত্রসমাজের ভূমিকা রচনাটি নিম্নে তুলে ধরা হলো।

সমাজ গঠনে ছাত্রসমাজ / সমাজে ছাত্রদের ভূমিকা

ভূমিকাঃ

সাফল্য হলো ছোট ছোট প্রচেষ্টার এক সামষ্টিক ফলাফল যার শুরুটা হয় ছাত্রজীবনেই।

— রবার্ট কোলিয়ার

কোন দেশের ভবিষ্যৎ কান্ডারী হচ্ছে সে দেশের ছাত্রসমাজ। কোন দেশের সাফল্য, অগ্রগতি অনেকাংশে নির্ভর করে ছাত্রসমাজের উপর। যে দেশের ছাত্রসমাজ দেশপ্রেম, সততা, আত্মত্যাগ, আত্মবিশ্বাসের মন্ত্রে দিক্ষীত সে দেশের উন্নতি অবশ্যম্ভাবী। দেশের যেকোন দুঃসময়ে সর্বপ্রথম যারা এগিয়ে আসে তারা হচ্ছে সে দেশের ছাত্রসমাজ। কোন দেশের সমাজের উন্নয়ন বা দেশ গঠন – কোনোটি ছাত্রসমাজের অংশগ্রহণ ব্যতীত সম্ভব নয়৷

ছাত্রদের ভূমিকার স্বরূপঃ

কথায় আছে “Student life is seedtime of life” অর্থাৎ জীবনের বীজ বপনের সময় হচ্ছে ছাত্রজীবন।

বলা বাহুল্য, ছাত্রদের হাতেই নিহিত থাকে দেশের উন্নয়নের বীজ৷ ছাত্ররা তাদের ছাত্রজীবনে অর্জিত শিক্ষা কাজে লাগিয়ে দেশকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যায়। দেশ পরিচালনার যোগ্যতা অর্জনের প্রকৃত সময় ছাত্রজীবন। এ সময় ছাত্ররা আর্থসামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত থাকে। ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টাকে সাথে নিয়েই ছাত্ররা দেশকে একধাপ করে করে এগিয়ে নিয়ে যায়৷

ছাত্রসমাজের লক্ষ্যঃ 

যদি বলা হয় ছাত্রজীবনের একমাত্র লক্ষ্য বই মুখস্থ করে পরীক্ষায় ভালো নাম্বার পাওয়া তবে তা হবে গতানুগতিক ধারার চিন্তা। ছাত্রসমাজের প্রকৃত লক্ষ্য হওয়া উচিত জ্ঞান অর্জন করা। যে জ্ঞানের ছটায় তারা সমাজকে আলোকিত করবে, দেশ থেকে অজ্ঞতা মুছে দেবে৷ Students are the architect of the country. প্রত্যেকের জীবনে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকবে এমনটা স্বাভাবিক। ছাত্রজীবন শেষে সকলে তাদের নির্দিষ্ট কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করে৷ কিন্তু, ছাত্রসমাজের প্রথম লক্ষ্য হওয়া উচিত ঐক্যবদ্ধভাবে সমাজের কল্যাণ সাধনের উদ্দেশ্যে কাজ করে যাওয়া।

ছাত্রসমাজের দায়িত্বঃ

ছাত্রসমাজের প্রথম দায়িত্ব হচ্ছে অধ্যয়ন৷ কারণ, কর্মজীবনে প্রবেশের প্রস্তুতি পর্ব হচ্ছে ছাত্রজীবন। তবে, নৈতিক চরিত্র গঠনের মাধ্যমে দেশের কল্যাণে এগিয়ে আসার দায়িত্বও কিন্তু ছাত্রসমাজের উপর ন্যস্ত থাকে। বাবা-মা, পরিবারের প্রতি যেমন আমাদের কিছু দায়িত্ব থাকে তেমনি একটি সুন্দর দেশ গঠনের দায়িত্ব থেকে সমাজের কেউ নিজেকে সরিয়ে রাখতে পারেনা।

ছাত্রসমাজ ও দেশগঠনঃ

ভাষা আন্দোলন কিংবা মুক্তিযুদ্ধ- ছাত্রসমাজের অংশগ্রহণ ব্যতীত দেশের ইতিহাসের এইসব গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় অসম্পূর্ণ থেকে যেত৷ ১৯৫২ সালে যদি ছাত্ররা নিজেদের প্রাণ বাজি রেখে “রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই ” শ্লোগানে গলা না মেলাতো তবে আজ আমরা বাংলাকে আমাদের রাষ্ট্র ভাষা হিসেবে পেতাম না৷ আর ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে তো সবচেয়ে বেশি অবদান ছিল ছাত্রসমাজের, ইতিহাস তার সাক্ষী। দেশগঠনে ছাত্রসমাজের ভূমিকা অপরিহার্য। যে দেশের ছাত্রসমাজ সততা নিষ্ঠার মন্ত্রে দিক্ষীত সে দেশের উন্নয়নের ভিত ততই মজবুত।

সমাজসেবায় ছাত্রসমাজঃ

সমাজের প্রতি আমাদের সকলেরই কিছুনা কিছু দায়িত্ব থাকে। আর এই অলিখিত দায়িত্ব সর্বাপেক্ষা বেশি ন্যস্ত থাকে ছাত্রদের ওপর। সমাজকে এগিয়ে নিতে হলে সর্বপ্রথম দরকার হয় জনসচেতনতা সৃষ্টি করা৷ নিরক্ষরতা দূরীকরণ, ডেঙ্গুর প্রকোপের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা সৃষ্টি, পরিবেশকে পরিচ্ছন্ন রাখা, দুর্যোগ প্রবণ এলাকার মানুষের পাশে এসে দাঁড়ানো এসব সামাজিক কর্মকাণ্ডে এগিয়ে আসা ছাত্রসমাজের নৈতিক কর্তব্য। ভবিষ্যতের দেশগড়ার কারিগরদের অংশগ্রহণে একদিন সমাজ হয়ে উঠবে সুন্দর।

পল্লী উন্নয়ন ও ছাত্রসমাজঃ

গ্রামপ্রধান দেশ বাংলাদেশ। প্রায় ৮৫ হাজার গ্রাম নিয়ে গঠিত আমাদের দেশ। কিন্তু, দুঃখের বিষয় এখনো আমাদের দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেক গ্রাম উন্নয়নের আলোকছটা থেকে অনেকটা দূরে রয়েছে। আর এই সব গ্রাম পরিবর্তনের দায়িত্বটা নিতে হবে ছাত্রসমাজকে। সুষম উন্নয়ন শব্দটা শুধু পরীক্ষার খাতা  অবধি সীমাবদ্ধ না রেখে বাস্তবে তার প্রয়োগ করতে হবে। কারণ, গ্রামকে অন্ধকারে নিমজ্জিত রেখে শুধু উন্নয়ন শহরকেন্দ্রিক হলে একটা দেশ কখনো পুরোপুরি উন্নত হতে পারবেনা।

নিরক্ষরতা দূরীকরণ ও ছাত্রসমাজঃ

বর্তমানে বাংলাদেশে নিরক্ষরতার হার ৪০ দশমিক ১৪ শতাংশ। বাংলাদেশের মত দরিদ্র প্রধান দেশে নিরক্ষতা দূরীকরণ বড় একটি চ্যালেঞ্জ। দরিদ্র পরিবারের কাছে পড়ালেখা মানে এক ধরনের বিলাসিতা ছাড়া আর কিছু নয়। কিন্তু শিক্ষা ছাড়া কখনোই কোন জাতির পক্ষে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। আর এই নিরক্ষরতা দূরীকরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ছাত্রদের এগিয়ে আসার কোন বিকল্প নেই। তাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত নিজে যেটুকু বিদ্যা অর্জন করবে তা ছড়িয়ে দিতে হবে আর দশজন পিছিয়ে পড়া মানুষের মাঝে। তাদের অংশগ্রহণে একদিন দেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে শিক্ষার আলো পৌঁছে যাবে।

গণশিক্ষা বিস্তারে ছাত্রসমাজের ভূমিকাঃ

দেশের মোট জনসংখ্যার  ২০-৩০ শতাংশ উচ্চ ডিগ্রিধারী যদি অন্তত ৫ জনকে সাক্ষর করার দায়িত্ব নেয় তবে ধীরে ধীরে তা পরিণত হবে গণশিক্ষার আন্দোলনে। কথায় আছে, শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। যতই নতুন ব্রীজ, রাস্তাঘাট তৈরি করা হোক না কেন যদি দেশের সিংহভাগ মানুষ অশিক্ষিত থেকে যায় তবে এই স্থাপনা সংরক্ষণের বিন্দুমাত্র জ্ঞান সে নিরক্ষর জনগোষ্ঠীর থাকবেনা। ছাত্রসমাজকে নিজের দেশের জন্য নিরক্ষর জনগোষ্ঠীকে নূন্যতম শিক্ষিত করার দায়ভার নিজেদের কাঁধে তুলে নিতে হবে৷ অবসর সময়ে তারা বিভিন্ন ক্যাম্প করে, নিজেদের মধ্যে সময় ভাগ করে নিয়ে ধীরে ধীরে গণশিক্ষার প্রসারে ভুমিকা পালন করতে পারে।

স্বাস্থ্যসেবা ও ছাত্রসমাজঃ

কথায় আছে, “স্বাস্থ্য সকল সুখের মূল”। কিন্তু, এমন অনেক পরিবার আছে যাদের নুন আনতে পান্তা ফুরায়। তাদের কাছে চিকিৎসা বরাবরই ব্যয়বহুল৷ আমাদের দেশের সরকার সরকারি হাসপাতালগুলোতে বিনামূল্যে ঔষুধ সরবারাহ করলেও দুর্নীতির কবলে পরে সেই ঔষুধ আর সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারেনা। মেডিকেল পড়ুয়া ছাত্রদের উচিত নিজেদের সময় থেকে কিছুটা সময় অন্তত পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য ব্যয় করা। ছাত্রসমাজ এগিয়ে আসলে টাকার অভাবে মৃত্যু এই শিরোনাম হয়তো আর আমাদের চোখে পড়বেনা।

জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ও ছাত্রসমাজের ভূমিকাঃ

সমস্যা জর্জরিত বাংলাদেশের জন্য জনসংখ্যা বৃদ্ধি প্রধান সমস্যাগুলোর একটি। ধর্মীয় কারণে হোক বা নিরক্ষরতার কারণে- জনসংখ্যা বৃদ্ধির সমস্যা মোকাবেলা বেশ কষ্টসাধ্য আমাদের দেশের জন্য। ছাত্রদের ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা বরাবরই অটল। ছাত্রসমাজের উচিত তাদের মত করে সমাজের কাছে অতিরিক্ত জনসংখ্যার কারণে দেশে কি ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে তা তুলে ধরা৷

কৃষি উন্নয়নে ছাত্রসমাজের ভূমিকাঃ

বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। কৃষকেরা এই দেশের মূল চালিকাশক্তি। কিন্তু কৃষিক্ষেত্রে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার সেভাবে চোখে পড়েনা৷ উন্নত প্রযুক্তি ছাড়া কোন দেশের পক্ষে বর্তমানে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। তাই ছাত্রদের প্রযুক্তির জ্ঞান শুধু পরীক্ষার খাতায় সীমাবদ্ধ না রেখে বাস্তবে প্রয়োগ করতে হবে৷ কোন সার ব্যবহার করলে উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে, কোন কীটনাশক ব্যবহারে ফসল পোকামুক্ত থাকবে এইসব কৃষকদের সচেতন করার দায়িত্ব ছাত্রদের নিতে হবে৷

কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ছাত্রসমাজঃ

বেকারত্ব দেশ ও ব্যক্তি উভয়ের জন্যই অভিশাপস্বরূপ৷ বেকারত্ব সমস্যা সমাধানের শক্তিশালী অস্ত্র হতে পারে চাকরির আশায় না থেকে উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলার মনোভাব। নিজ নিজ গ্রামে খামার, মাছ চাষ, মৌসুমী ফলের চাষ যেমন ব্যক্তিকে সাবলম্বী করে তোলে তেমনি আরো অনেক লোকের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করে। এতে করে দেশের বেকারত্বের সমস্যা যেমন লাঘব হয় তেমনি গ্রামের উন্নতি হয়। বর্তমানে নিজেদের দক্ষতা কাজে লাগিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার করে অনেক ছাত্র ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করছে৷

পরিবেশ রক্ষায় ছাত্রসমাজঃ

বর্তমান বিশ্বে পরিবেশের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি গ্রীণ হাউজ ইফেক্ট। চারপাশের নগরায়নে আমরা হারাচ্ছি আমাদের সবুজ বনায়ন। সমুদ্রের বরফ গলা, বন উজাড়ের মত সমস্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। কোন দেশের ২৫% বনভূমি থাকা আবশ্যক হলেও আমাদের দেশে তার পরিমাণ ১৫ দশমিক ২৮ শতাংশ। দেশের ছাত্র সংখ্যা নেহাৎ কম নয়। ছাত্রসমাজের সিংহভাগ যদি তাদের শিক্ষাঙ্গনে, বাসস্থানের আশেপাশে বৃক্ষরোপন করে তবে আমাদের দেশের বনভূমির পরিমাণ বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি অনেকাংশে রোধ পাবে৷

দুর্নীতি দমনে ছাত্রসমাজের ভূমিকাঃ

“দুর্নীতি জাতির অন্তরায়” এই ভাবসম্প্রসারণ প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছে ভীষণ পরিচিত। “বাংলাদেশ দুর্নীতিতে পরপর পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন ” এটিও দেশের জন্য সুখকর কোন রেকর্ড নয়। বর্তমানে দুর্নীতিতে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩তম। নিজের অ্যাসাইনমেন্ট অন্য কাউকে দিয়ে করানো, অন্যের কাছ থেকে পরীক্ষায় দেখে লেখা এসব কিন্তু দুর্নীতির বাইরে নয়। দুর্নীতি দমনের শিক্ষার শুরুটা ছাত্রজীবন থেকেই শুরু হওয়া প্রয়োজন। কারণ, ছাত্ররাই দেশের ভবিষ্যৎ কান্ডারী। সমাজ গঠনে ছাত্রসমাজের ভূমিকা তাই অস্বীকার করার কোন উপায় নেই।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় ছাত্র সমাজের ভূমিকাঃ

কোন দেশের ভবিষ্যৎ কর্ণধার সে দেশের তরুণ ছাত্রসমাজ। তাই, দেশে কোন বিরূপ পরিস্থিতি বা দেশ দুর্যোগের কবলে পড়লে সবার এগিয়ে আসে সে দেশের ছাত্রসমাজ। এ সময় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রদের দুর্যোগ কবলিত স্থানের মানুষ জনদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে, তাদের জন্য খাবার, বিশুদ্ধ জল, ত্রান সংগ্রহ করতে দেখা যায়। যে সমস্ত মানুষ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে তাদের ঘরবাড়ি হারিয়েছে বহু তরুণেরা তাদের জন্য ত্রান সংগ্রহ করে নতুন করে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে৷

সংস্কৃতি চর্চায় ছাত্রসমাজের ভূমিকাঃ

কোন দেশকে পুরো বিশ্বের কাছে সম্মানের সাথে তুলে ধরার অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে সংস্কৃতি। বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তির যুগে পুরো বিশ্বই যেন “গ্লোবাল ভিলেজ”। একুশ শতকে দাঁড়িয়ে নিজের দেশের সংস্কৃতিকে খুব সহজে বিশ্বের সামনে তুলে ধরা যায়। তরুণরা সুষ্ঠু সাংস্কৃতিক চর্চার মাধ্যমে দেশের ঐতিহ্যকে আরো সমৃদ্ধ করবে। সাহিত্যের বিভিন্ন শাখা, শিল্প, ইতিহাস এবং ভাষাবিজ্ঞান চর্চার মাধ্যমে জাতীয় সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করার অলিখিত দায়িত্ব দেশের ছাত্রসমাজের।

কুসংস্কার দূরীকরণে ছাত্রসমাজের ভুমিকাঃ

জিন, ভূত, পানিপোড়া এইসব শব্দের সাথে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ খুব পরিচিত। বাংলাদেশে এমনো অনেক গ্রাম আছে যেখানে সর্দি-জ্বরেও তারা হুজুরের কাছে  পানিপোড়ার জন্য ছুটে। এসব কুসংস্কার আর অন্ধবিশ্বাসের জেরে অনেক অসাধু লোক তাদের আখের গুছিয়ে নিচ্ছে। ছাত্রদের এসব কুসংস্কারের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে হবে। এসকল অসাধু ব্যবসায়ীর মুখোশ সকলের সামনে খুলে দিতে হবে।

সম্প্রীতি রক্ষায় ছাত্রসমাজঃ

“ শুন হে মানুষ ভাই, সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই ”

কবি চন্ডীদাস তার এই দুলাইনের উক্তিতেই বুঝিয়ে দিয়েছেন আমাদের সবচেয়ে বড় পরিচয় আমরা সকলে মানুষ। ছাত্রদের মধ্যে কখনো সাম্প্রদায়িক মনোভাব পুষে রাখা উচিত নয়। সমাজকে সুন্দর রাখতে সর্বপ্রথম প্রয়োজন সম্প্রীতি। হিংসা-বিদ্বেষ দূরে রেখে নিজ ধর্মের প্রতি বিশ্বাস রেখে সমাজের সকলে যদি একতা বজায় রাখে তবে দেশের জন্য একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ অপেক্ষায় থাকে৷ শিক্ষার্থীদের কখনোই উচিত নয় সাম্প্রদায়িক মনোভাব পুষে রাখা। কারণ, তাদের উপর নির্ভর করে থাকে একটি দেশের ভবিষ্যৎ।

উপসংহারঃ

“Education is the most powerful weapon you can use to change the world.” —B.B. King

শিক্ষার মত শক্তিশালী হাতিয়ারের বিকল্প খুঁজে পাওয়া মুশকিল। শিক্ষা যদি হাতিয়ার হয় তবে শিক্ষার্থীরা হচ্ছে সে হাতিয়ারের চালক৷ অর্জিত শিক্ষাকে ছাত্রসমাজ কিভাবে বাস্তব জীবনে কাজে লাগাচ্ছে সেটির উপর নির্ভর করে কোন শিক্ষার্থী কতটা প্রকৃত জ্ঞান অর্জন করলো সেটি। যে শিক্ষা দেশের উন্নয়নে কাজে লাগেনা সেটি শুধু পুঁথিগত বিদ্যা হয়েই পরীক্ষার খাতায় সীমাবদ্ধ থাকে৷ সকলের জীবনের ভবিষ্যৎ সাফল্য নির্ধারণের প্রথম ধাপ হচ্ছে ছাত্রজীবন। রবার্ট কোলিয়ার বলেছেন-

“সাফল্য হলো ছোট ছোট প্রচেষ্টার এক সামস্টিক ফলাফল যার শুরুটা ছাত্রজীবনেই।”

আরও পড়ুন- দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান

আরও পড়ুন- রচনা: আমার প্রিয় শিক্ষক

আরও পড়ুন- রচনাঃ স্বদেশপ্রেম (২১ পয়েন্ট)