রমযান মাস এসেছে, শুরু হয়েছে রোজা। এবছর রমযান মাস পড়েছে গরম কালে এবং অন্যান্য বারের তুলনায় রোযা বেশ দীর্ঘ এবং আবহাওয়াও বেশ গরম। তাই এই রোযায় প্রয়োজন অতিরিক্ত কিছু সতর্কতা এবং প্রস্তুতি।
রোযা রেখে একজন রোযাদার ব্যক্তির প্রয়োজন ভাল ও পুষ্টিকর খানার যা তার সারাদিনের চাহিদা পূরণ করবে। এবার তা আরো বেশি প্রয়োজন কারণ এই গরমে দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকায় শরীরে পানি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপাদানের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
রোযায় সুস্থ থাকতে সঠিক খাদ্যাভাসের কোন বিকল্প নেই। আসুন জেনে নেই তেমন কিছু টিপস যা এই গরমে রোযাদার দের সুস্থ ও প্রফুল্ল থাকতে সাহায্য করবে।
- ইফতারি থেকে সেহরি পর্যন্ত প্রচুর পানি পান করুন। এমনিতেই গরমের দিন শরীরে পানি স্বল্পতা দেখা যায়, তার উপর রোযার কারণে এই পানি স্বল্পতা শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। পর্যাপ্ত পানি পান রোযা এবং গরম জনিত মাথা ব্যাথা দূর করতেও সাহায্য করে। এজন্য ইফতারে রাখুন প্রচুর পানীয় জাতীয় খাবার। তবে বাজারে পাওয়া প্যাকেটজাত শরবতের চেয়ে বাসায় বানানো লেবুর শরবত, ফলের রস শরীরের জনে বেশি উপকারি। রাখতে পারেন তরমুজ এর মত ফল যা ইফতারে সারাদিনের ক্লান্তি দূর করবে, পাশাপাশি পানির চাহিদাও মেটাবে।
- আমাদের দেশে ঐতিহ্যগত ভাবেই ইফতারিতে নানা রকম ভাজা পোড়া, ডিপ ফ্রাইড রিচ ফুড খাওয়া হয়। যা রোযা রেখে সারাদিনের না খাওয়া শরীরে এসব খাবার গ্যাস, পেটে জ্বালা নানা রকম সমস্যার সৃষ্টকরতে পারে। এছাড়া জানেন কি, রোযার ভাজাপোড়া খাবারে থাকে সর্বোচ্চ পরিমাণ ক্যালরি। চলুন চোখ বুলিয়ে নেয়া যাক একবার:
খাবার | ক্যালরি |
পিয়াজু ১ টা ছোট | ৫০ |
বেগুনী ১ টি বড় | ১৮০ |
হালিম ১ বাটি | ১৮০ |
কাবাব (১০০ গ্রাম) | ১৭০ |
কৃত্রিম শরবত | ৮০-১০০ |
বুন্দিয়া ১ কাপ | ৩৬২ |
তাই আমাদের ইফতারে সহজে হজম হয় আবার এনার্জিও দেবে এমন খাবার যেমন, ছোলা, লেবুর শরবত, খেজুর ইত্যাদি খাওয়া উচিত।
- অনেকেরই এমন বদভ্যাস রয়েছে যে রাতে উঠতে অলসতা করে সেহরি খেতে না উঠা। এটা খুবই খারাপ অভ্যাস এবং স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর। কারণ সেহরিতে যা খাবেন তা আপনার সারাদিনের কাজের শক্তি যোগাবে এবং আপনার বডি সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখবে।
- আঁশ বা ফাইবার রোযার সময় একটি গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য উপাদান। এটি দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার ফলে যে কোষ্ঠ্যকাঠিন্য দেখা দেয় তা দূর করতে সাহায্য করে।
- তেল চর্বি পরিহার করে শাক সবজি ও অন্যান্য খবাব্র এবং স্বল্প পরিমানে কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করা সমীচীন।
- রোযা রেখে ব্যায়াম করতে হয়ত শরীরে কুলাবে না তাই হাটাহাটি হতে পারে ভাল বিকল্প। ইফতারি বা সেহেরীর পর মাত্র ১০-২০ মিনিট হাঁটলেই তা হজমে অনেকটা সহায়তা করে।
সর্বোপরি রহমতের এই মাসে খাদ্যাভাসে কিছু স্বাস্থ্যকর পরিবর্তন আনলেই সুস্থতার সাথে ইবাদত বন্দেগী এবং অন্যান্য সকল কাজ অত্যন্ত সুন্দর ভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব।
আরও পড়ুন- কোন খাবারে কত ক্যালরি