in

ভাবসম্প্রসারণঃ যেখানে দেখিবে ছাই উড়াইয়া দেখ তাই, পাইলেও পাইতে পার অমূল্য রতন

ভাবসম্প্রসারণঃ যেখানে দেখিবে ছাই উড়াইয়া দেখ তাই, পাইলেও পাইতে পার অমূল্য রতন
ভাবসম্প্রসারণঃ যেখানে দেখিবে ছাই উড়াইয়া দেখ তাই, পাইলেও পাইতে পার অমূল্য রতন

অলসতার কারণে আজকের হাত ছাড়া করা সুযোগ ভবিষ্যতে আফসোসের কারণ হতে পারে। তাই বলা হয়ে থাকে, যেখানে দেখিবে ছাই উড়াইয়া দেখ তাই, পাইলেও পাইতে পার অমূল্য রতন। জীবনে চলার পথে কুড়িয়ে পাওয়া কোন সুযোগকেই অবহেলা করার অবকাশ নেই।

যেখানে দেখিবে ছাই উড়াইয়া দেখ তাই, পাইলেও পাইতে পার অমূল্য রতন ভাবসম্প্রসারণ 

মূলভাবঃ আমাদের জীবনের চলমান ধারায় কোন ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জিনিসকে কখনোই তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা উচিত নয়। অনেক সময় এই সব ছোট বা ক্ষুদ্র বস্তুর মধ্যেই নিহিত থাকে বৃহত্তর কল্যাণ।

সম্প্রসারিত ভাবঃ মানব জীবনের অসমতল ও অমসৃণ পথ চলার পথে আমাদের প্রতিনিয়ত নানা ধরনের ঘটনার সম্মুখীন হতে হয়। আর এসব বেশিরভাগ ঘটনাই ঘটে কোন জিনিসকে কেন্দ্র করে। ক্ষুদ্র-বৃহৎ সেই সমস্ত জিনিস মানুষের জীবনে অতুলনীয় প্রভাব বিস্তার করে। মানুষের চেতনা সাধারণত বৃহৎ কোন জিনিসের প্রতি মানুষকে বেশিরভাগ সময় আকৃষ্ট করে। বলা যেতে পারে এটি মানব চরিত্রের একটি অতি স্বাভাবিক প্রবৃত্তি। মানুষ যেহেতু সুন্দরের পূজারী, খুবই স্বাভাবিকভাবেই সৌন্দর্য এবং ঐশ্বর্যমণ্ডিত জিনিসই মানুষের নজর কাড়তে সক্ষম। যে কোনো ক্ষুদ্র বা কম সৌন্দর্যমন্ডিত বস্তুর তুলনায় বৃহৎ বা সৌন্দর্যমণ্ডিত বস্তুর মাঝে মানুষ অধিক তাড়াতাড়ি আকর্ষিত হয়। মানুষের সহজাত আচরণের কারণেই ক্ষুদ্র বা ছোট কোন বস্তু মানুষের অবচেতন মনকে আকর্ষণ করতে পারে না। অনেক ক্ষেত্রেই মানুষ সৌন্দর্যের প্রতি মুগ্ধ হয়ে অনেক মূল্যবান বস্তুকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে। ফলে সেই সকল ক্ষুদ্র বস্তুর মধ্যে যে মাহাত্ম্য নিহিত থাকে তা মানুষের অগোচরে, অবহেলা ও অনাদরে রয়ে যায়।

সাধারণত কোন জিনিসের প্রতি তার সৌন্দর্যকে মুখ্য বিষয় হিসেবে বিবেচনা করে তার প্রতি আকৃষ্ট না হয়ে, তার গুণাগুণকে মুখ্য বিষয় হিসেবে বিবেচনা করা প্রয়োজন। যে কোন বস্তুর সৌন্দর্য, বাহ্যিক আকার-আকৃতির কখনোই সেই বস্তুর মূল্য নির্ধারণের সূচক হতে পারে না। অনেক সময় অনেক ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জিনিসের মধ্যেও অমূল্য সম্পদ লুকিয়ে থাকে। কখনোই আকারের ভিত্তিতে বা বাহ্যিক লাবণ্যতার ভিত্তিতে সেই বস্তুকে মূল্যায়ন করা উচিত নয়। অসীম সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি এই পৃথিবীতেই ক্ষুদ্র বা বৃহৎ কোন বস্তুই কখনোই কারো তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যের বিষয় হতে পারে না। প্রতিটি বস্তুর সৃষ্টির পেছনে রয়েছে সৃষ্টিকর্তার কোনো না কোনো উদ্দেশ্য। সৃষ্টিকর্তার প্রত্যেকটা সৃষ্টি তার নিজস্ব মহিমায় মহিমান্বিত। মানব জীবনের সহজাত প্রবণতা হলো সোনার হরিণের পেছনে প্রতিনিয়ত ছুটে চলা। আর এই ছুটে চলার মধ্যে অনেক সময়ই মানুষ ধরাকে সরা জ্ঞান করে থাকে।

অনেক ক্ষুদ্র জিনিসের ভেতরে মূল্যাতীত সম্পদ থাকা সত্বেও আমাদের সহজাত আচরণের কারণে তাকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে সেই অমূল্য জিনিসকে অবহেলা করে ছুটে চলা হয় দুষ্প্রাপ্য কোন সম্পদের পেছনে। অথচ আমাদের চারপাশে ভালোভাবে খেয়াল করলেই দেখা যাবে অনেক অমূল্য সম্পদ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে, শুধুমাত্র দরকার সেই সব অমূল্য সম্পদকে খুঁজে বের করে সঠিক সময়ে সঠিক কাজে লাগিয়ে মানব জীবনে অগ্রগতি সাধন করা।

আমাদের জীবনে মাঝে মাঝে ছোট বড় অনেক সুযোগ আসে সামনে এগিয়ে যাওয়ার। কিন্তু আমরা ছোট বড় বিবেচনা করে বেশিরভাগ সময়ই সেসব সুযোগ হাত ছাড়া করি। পরে এক সময় দেখা যায়, সেই ছোট সুযোগই যদি কাজে লাগানো যেত তাহলে জীবন অনেক সহজ, সুন্দর হতো। “যেখানে দেখিবে ছাই, উড়াইয়া দেখ তাই, পাইলেও পাইতে পারো অমূল্য রতন”- এই কথাটির গভীরে লুকিয়ে আছে জীবনের বিশাল বড় সত্য। অবহেলায়, অলসতায় ছোট ছোট সুযোগ হাত ছাড়া না করলে একদিন যেকোন মানুষ পৌঁছে যেতে পারে সফলতার চূড়ান্ত চূড়ায়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, সমুদ্রতটে ঢেউয়ের সাথে অসংখ্য ঝিনুক ভেসে আসে। আপাতদৃষ্টিতে এই সব ঝিনুককে কোন কাজের মনে না হলেও, এই সকল ঝিনুকের মাঝেই কিন্তু পাওয়া যায় অমূল্য রতন মুক্তা। তাই সমুদ্রতটে ভেসে আসা এই অসংখ্য ঝিনুকে কখনোই তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যের নজরে দেখা যুক্তিযুক্ত নয়। ঠিক একইভাবে মানব জীবনে চলার পথে যে কোন ছোট কাজকে কখনোই তুচ্ছ করা উচিত নয়। যে কোনো ক্ষুদ্র কাজ বা প্রচেষ্টাকে আপাতদৃষ্টিতে ছোট মনে হলেও ভবিষ্যতে তা সফলতার চাবিকাঠি হিসেবে পরিণত হতে পারে।

মন্তব্যঃ আমাদের দৈনন্দিন জীবনে চলার পথে নানা বাধা-বিপত্তি আসে। আমাদের উচিত সে সব বাধা-বিপত্তি মোকাবেলার ক্ষেত্রে যে কোন ছোট বা ক্ষুদ্র কাজকে অবজ্ঞা না করে, সেই কাজ ঠিকমতো শেষ করে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া। এক সময় ছোট ছোট এই সব কাজের মাধ্যমেই জীবনে আসবে সফলতা। খেয়াল রাখতে হবে বৃহৎ বস্তুর দাম্ভিকতার আড়ালে কখনোই যেন কোন ক্ষুদ্র বস্তু অবহেলায় পড়ে না থাকে। অনেক সামান্য ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বস্তুর মধ্যেও অপরিসীম গুরুত্বপূর্ণ সম্পদের সন্ধান মিলতে পারে।

গুরুত্বপূর্ণ সকল ভাবসম্প্রসারণ-

১। ভাবসম্প্রসারণঃ পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি

২। ভাবসম্প্রসারণঃ একতাই বল

৩। ভাবসম্প্রসারণ: কীর্তিমানের মৃত্যু নেই / মানুষ বাঁচে তার কর্মের মধ্যে, বয়সের মধ্যে নয়

৪। ভাবসম্প্রসারণঃ ভোগে নয়, ত্যাগেই প্রকৃত সুখ

৫। ভাবসম্প্রসারণঃ দুর্নীতি জাতীয় জীবনে অভিশাপস্বরূপ

৬। ভাবসম্প্রসারণঃ দুর্জন বিদ্বান হলেও পরিত্যাজ্য

৭। পরের অনিষ্ট চিন্তা করে যেই জন

৮। ভাবসম্প্রসারণ: সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই

৯। ভাবসম্প্রসারণঃ সুশিক্ষিত লোক মাত্রই স্বশিক্ষিত

১০। ভাবসম্প্রসারনঃ আপনারে লয়ে বিব্রত রহিতে আসে নাই কেহ অবনী পরে..

১১। ভাবসম্প্রসারণঃ অর্থই অনর্থের মূল

১২। ভাবসম্প্রসারণঃ পুষ্প আপনার জন্য ফোটে না।

১৩। ভাবসম্প্রসারণঃ গ্রন্থগত বিদ্যা পরহস্তে ধন, নহে বিদ্যা নহে ধন হলে প্রয়োজন

১৪। ভাবসম্প্রসারণঃ লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু

১৫। ভাবসম্প্রসারণঃ ছোট ছোট বালুকণা, বিন্দু বিন্দু জল, গড়ে তোলে মহাদেশ সাগর অতল

১৬। ভাবসম্প্রসারণঃ এ জগতে হায়, সেই বেশি চায় আছে যার ভূরি ভূরি। রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি।

১৭। ভাবসম্প্রসারণঃ যে সহে সে রহে

১৮। ভাবসম্প্রসারণঃ গতিই জীবন, স্থিতিতে মৃত্যু

১৯। ভাবসম্প্রসারণঃ একবার না পারিলে দেখ শতবার

২০। ভাবসম্প্রসারণঃ যেমন কর্ম তেমন ফল