in ,

ভূমিকম্প কাকে বলে? ভূমিকম্পের কারণ ও ফলাফল

ভূমিকম্প কাকে বলে? ভূমিকম্পের কারণ ও ফলাফল
ভূমিকম্প কাকে বলে? ভূমিকম্পের কারণ ও ফলাফল

ভূমিকম্প কাকে বলে ও ভূমিকম্পের কারণ ও ফলাফল নিম্নে তুলে ধরা হলো।

ভূমিকম্প ( Earthquake)

পৃথিবীর কঠিন ভূত্বকের কোন কোন অংশ প্রাকৃতিক কোন কারণে কখনো কখনো অল্প সময়ের জন্য হঠাৎ কেঁপে ওঠে। ভূত্বকের এরূপ আকস্মিক কম্পনকে ভূমিকম্প বলে। ভূকম্পন সাধারণত কয়েক সেকেন্ড স্থায়ী হয়, আবার কখনো কিছু সময় পর পর অনুভূত হয়। এ কম্পন কখনো অত্যন্ত মৃদু আবার কখনো অত্যন্ত প্রচন্ড হয়।

ভূমিকম্পের প্রধান কারণ ( Main cause of earthquakes) :

১। পৃথিবীর উপরিভাগ কতগুলো ফলক/ প্লেট দ্বারা গঠিত। এই প্লেট সমূহের সঞ্চালন প্রধানত ভূমিকম্প ঘটিয়ে থাকে।

২। অগ্ন্যুৎপাতের ফলে প্লেট সমূহের উপর ভূমিকম্পন সৃষ্টি হয়।

অপ্রধান কারণঃ

১) শিলাচ্যুতি বা শিলাতে ভাঁজের সৃষ্টিঃ কোন কারণে ভূপৃষ্ঠের অভ্যন্তরে বড় ধরনের শিলাচ্যুতি ঘটলে বা শিলাতে ভাঁজের সৃষ্টি হলে ভূমিকম্প হয়। ১৯৩৫ সালে বিহারে এবং ১৯৫০ সালে আসামে এই কারণেই ভূমিকম্প হয়।

২) তাপ বিকিরণঃ ভূত্বক তাপ বিকিরণ করে সংকুচিত হলে ফাটল ও ভাঁজের সৃষ্টি হয়ে ভূমিকম্প হয়।

৩) ভূগর্ভস্থ বাষ্পঃ পৃথিবীর অভ্যন্তরে অত্যাধিক তাপের কারণে বাষ্পের সৃষ্টি হয়। এই বাষ্প ভূত্বকের নিম্নভাগে ধাক্কা দেওয়ার ফলে প্রচন্ড ভূকম্পন অনুভূত হয়।

৪) ভূগর্ভস্থ চাপের বৃদ্ধি বা হ্রাসঃ অনেক সময় ভূগর্ভে হঠাৎ চাপের হ্রাস বা বৃদ্ধি হলে তার প্রভাবে ভূমিকম্প হয়।

৫) হিমবাহের প্রভাবঃ হঠাৎ করে হিমবাহ পর্বতগাত্র থেকে নিচে পতিত হলে ভূপৃষ্ঠ কেঁপে ওঠে এবং ভূমিকম্প হয়।

ভূমিকম্পের ফলাফল (Effects of earthquakes):

ভূমিকম্পের ফলে ভূপৃষ্ঠে অনেক ধরনের পরিবর্তন ঘটে এবং বহু ধ্বংসলীলা সাধিত হয়। বাড়িঘর ধন-সম্পদ ও যাতায়াত ব্যবস্থা বিনষ্ট হয়। এতে জীবনেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়ে থাকে। নিচে ভূমিকম্পের ফলাফল আলোচনা করা হলোঃ

১) ভূমিকম্পের ফলে ভূত্বকের মধ্যে অসংখ্য ভাঁজ, ফাটল বা ধসের সৃষ্টি হয়। নদীর গতিপথ পাল্টে যায়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় ১৭৮৭ সালে আসামে যে ব্যাপক ভূমিকম্প হয় তাতে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের তলদেশ কিছুটা উঁচু হয়ে যায়। ফলে নদীটি তার গতিপথ পাল্টে বর্তমানে যমুনা নদী দিয়ে প্রবাহিত হতে শুরু করে।

২) ভূমিকম্পের ফলে অনেক সময় সমুদ্রতল উপরে উথিত হয়, পাহাড়- পর্বত বা দ্বীপের সৃষ্টি করে। আবার কোথাও স্থলভাগের অনেক স্থান সমুদ্রতলের ডুবে যায়। ১৮৯৯ সালে ভারতের কচ্ছ উপসাগরের উপকূলে প্রায় ৫,০০০ বর্গকিলোমিটার স্থান সমুদ্রগর্ভে নিমজ্জিত হয়।

৩) ভূমিকম্পের ফলে অনেক সময় নদীর গতি পরিবর্তন হয় বা কখনো কখনো বন্ধ হয়ে যায়। কখনো কখনো নদী শুকিয়ে যায়। আবার সময় সময় উচ্চভূমি অবনমিত হয়ে জলাশয় এর সৃষ্টি হয়। ১৯৫০ সালে আসামের ভূমিকম্পে দিবং নদীর গতি পরিবর্তিত হয়।

৪) ভূমিকম্পের ফলে অনেক সময় পর্বতগাত্র থেকে হিমানী সম্প্রপাত হয় এবং পর্বতের উপর শিলাপাত হয়।

৫) ভূমিকম্পের ফলে হঠাৎ করে সমুদ্র উপকূল সংলগ্ন এলাকা জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়।

আরও পড়ুন- আগ্নেয়গিরি কাকে বলে? আগ্নেয়গিরি কত প্রকার?

আরও পড়ুন- সমুদ্রস্রোত কাকে বলে? সমুদ্রস্রোতের কারণ ও ফলাফল। সমুদ্রস্রোতের প্রভাব