in

বাণিজ্যিক ব্যাংক কাকে বলে? বাণিজ্যিক ব্যাংকের কার্যাবলী

বাণিজ্যিক ব্যাংক কাকে বলে? বাণিজ্যিক ব্যাংকের কার্যাবলী
বাণিজ্যিক ব্যাংক কাকে বলে? বাণিজ্যিক ব্যাংকের কার্যাবলী

বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ বাণিজ্যিক লাভের উদ্দেশ্যে স্বল্পমেয়াদি ঋণ প্রদান করে থাকে। বাংলাদেশে বহু বাণিজ্যিক ব্যাংক রয়েছে, যেমন- সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, জনতা ব্যাংক লিমিটেড, অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড, রূপালী ব্যাংক লিমিটেড, উত্তরা ব্যাংক লিমিটেড, পূবালী ব্যাংক লিমিটেড, ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড, সিটি ব্যাংক লিমিটেড, ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড প্রভৃতি।

বাণিজ্যিক ব্যাংকের কার্যাবলী

অর্থনীতিতে বাণিজ্যিক ব্যাংকের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। ব্যবসা বাণিজ্যের প্রাণই হলো এই বাণিজ্যিক ব্যাংক। এই শ্রেণির ব্যাংকসমূহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে অর্থনীতিতে উন্নয়নে সহায়তা করে।

বাণিজ্যিক ব্যাংকের অন্যতম প্রধান কাজ হলো জনসাধারণের কাছ থেকে আমানত গ্রহণ করা। ব্যাংকের আমানত সাধারণত তিন প্রকারের- চলতি, সঞ্চয়ী এবং স্থায়ী আমানত।

চলতি আমানতের গচ্ছিত অর্থ যে কোন সময় তোলা যায়। এই আমানতের জন্য ব্যাংক আমানতকারীকে কোন সুদ প্রদান করে না। সঞ্চয়ী আমানত থেকে সপ্তাহে এক বা দুইবার অর্থ উত্তোলন করা যায়। এজন্য ব্যাংক আমানতকারীকে অল্প সুদ প্রদান করে। আর যে আমানত একটি নির্দিষ্ট সময় অতিক্রান্ত হবার পর তোলা যায় তাকে স্থায়ী আমানত বলে। স্থায়ী আমানতের জন্য আমানতকারীকে উচ্চ হারে সুদ প্রদান করা হয়।

ঋণ প্রদার বাণিজ্যিক ব্যাংকের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। জনসাধারণের কাছ থেকে গৃহীত অর্থের একটি নির্দিষ্ট অংশ গচ্ছিত রেখে অবশিষ্ট অর্থ ব্যাংক ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের ঋণ হিসেবে প্রদান করে থাকে। ব্যাংক ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে সাধারণত মূল্যবান সম্পত্তি বন্ধক রেখে এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো সাধারণত স্বল্পমেয়াদি ঋণ দান করে। কিন্তু বর্তমানে চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে মধ্যেমেয়াদি ও ক্ষেত্রবিশেষ দীর্ঘমেয়াদি ঋণও দিয়ে থাকে।

বিনিময়ের মাধ্যম সৃষ্টি করা বাণিজ্যিক ব্যাংকের অন্যতম কাজ। কাগজি নোট প্রচলন করার ক্ষমতা কেবল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের থাকলেও বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ চেক, ব্যাংক ড্রাফট, হুন্ডি, ভ্রমণকারীর ঋণপত্র ইত্যাদি বিনিময়ের মাধ্যম সৃষ্টি করে। উন্নত দেশগুলোতে অধিকাংশ লেনদেনই এসব বিনিময়ের মাধ্যমের সাহায্যে সম্পন্ন হয়ে থাকে।

বাট্টা (Discount) ধার্য করে বিনিময় বিল ভাঙ্গিয়ে দেওয়া বাণিজ্যিক ব্যাংকের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পূর্বেই টাকার প্রয়োজন হলে বিনিময় বিলের মালিক বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে উক্ত বিল ভাঙ্গিয়ে নগদ টাকা পেতে পারে। এ কাজে ব্যাংক প্রচুর মুনাফা অর্জন করে। বাণিজ্যিক ব্যাংক অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ক্রেতা- বিক্রেতাদের দেনা-পাওনা নিষ্পত্তিতে সাহায্য করে। বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমেই বৈদেশিক বাণিজ্যের অধিকাংশ কাজ পরিচালিত হয়।

বাণিজ্যিক ব্যাংক নিরাপদে এবং দ্রুত টাকা স্থানান্তর করে। এসব ব্যাংক চেক, ব্যাংক ড্রাফট, পে-অর্ডার, ভ্রমণকারীর চেক, টেলিগ্রাফিক ট্রান্সফার প্রভৃতি উপায়ে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে অর্থ প্রেরণে জনগণকে সহায়তা করে।

বাণিজ্যিক ব্যাংক পূর্বোক্ত কার্যাবলি ছাড়াও এর গ্রাহকের সুবিধার্থে তাদের প্রতিনিধি হিসেবে আরও অনেক কাজ সম্পদান করে, যেমন- বন্ড, স্টক, শেয়ার, ডিবেঞ্চার ক্রয়-বিক্রয় ইত্যাদি। তাছাড়া গ্রাহকদের বাড়িভাড়া, আয়কর, বিমার প্রিমিয়াম, টেলিফোন ও বিদ্যুৎ বিল প্রভৃতি পরিশোধে সহায়তা করে। মূল্যবান অলংকার, দলিলপত্র প্রভৃতি নিরাপদে গচ্ছিত রাখে।

আরও পড়ুন- কেন্দ্রীয় ব্যাংক কাকে বলে? কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কার্যাবলী আলোচনা করো।

আরও পড়ুন- ব্যাংক কাকে বলে? ব্যাংকের শ্রেণিবিভাগ