in

তাকদীর ওয়েব সিরিজ ও নাটক নিয়ে চঞ্চলের ভাবনা

শিল্পের জন্য অর্থের বরাদ্দ নেই, ওয়েব সিরিজেই আশার আলো দেখেন চঞ্চল চৌধুরী

তাকদীর ওয়েব সিরিজ
তাকদীর ওয়েব সিরিজ

তাকদীর ওয়েব সিরিজ করে দুই বাংলায় রীতিমতো হইচই ফেলে দিয়েছিলেন চঞ্চল চৌধুরী। তাকদীর ওয়েব সিরিজ যারাই দেখেছেন তারাই বিনা বাক্য ব্যয়ে চঞ্চল চৌধুরীর শ্রেষ্ঠত্ব মেনে নিয়েছেন। তাকদীর ওয়েব সিরিজ এর পর্যালোচনা (রিভিউ) দিয়ে ইউটিউবে ভুরিভুরি ভিডিও বানানো হয়েছে। যার সবটাতেই চঞ্চল বন্দনা চলেছে সমানতালে।

তাকদীর ওয়েব সিরিজ ও নাটক নিয়ে চঞ্চলের ভাবনা

‘সিনেমা নাটক যে মাধ্যমই হোক, আমরা আসলে জীবনের গল্প বলতে চাই। আর আমাদের মূল লক্ষ্যই থাকে মানুষ। তাদের কাছে যেন গল্পটা বিশ্বাসযোগ্য উপায়ে উপস্থাপন করতে পারি।‘ -চঞ্চল চৌধুরী

প্রথমে মঞ্চ, পেশাগত দিক দিয়ে টেলিভিশন, এরপর ফিল্ম, এবং সবশেষে ওয়েব সিরিজের নিয়মিত মুখ হয়ে উঠেছেন চঞ্চল চৌধুরী। তবে এ নিয়ে আক্ষেপও ঝরে পড়ে চঞ্চলের কণ্ঠে।

চোখের সামনে যেখানে হাজার কোটি টাকা নয়ছয় হচ্ছে, উলটো পিঠে বরাদ্দ কমছে সিনেমা- নাটক সহ সমগণ্ডির অন্যান্য শিল্পে। এর ভুক্তভোগী আপাতদৃষ্টিতে শুধু শিল্পী বা কর্মীরাই নন, গোটা সমাজও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া সিনেমায় সেন্সরশিপ এবং গতানুগতিক পড়তি মানের নাটক নিয়ে ভীষণ নিরাশ তিনি। শিল্পের প্রতি লোকের উদাসীনতা এবং অনিয়ম একজন শিল্পীর জন্য ভীষণ পীড়াদায়ক। আর সেখানেই আলোকবর্তিকা হিসেবে ওয়েব প্ল্যাটফর্মের আবির্ভাব মানেন।

সাম্প্রতি সময়ে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ZEE5- এর ওয়েব সিরিজ ‘কন্ট্রাক্ট’ আর গত বছরের চমক ‘তাকদীর’ ওয়েব সিরিজ নিয়ে আলোচনার কেন্দ্রেই আছেন এই জাতীয় পুরস্কার জয়ী অভিনেতা। ওয়েব সিরিজের মাধ্যমে দর্শককে সেরা কাজ উপহারের তাগাদা থেকেই জি ফাইভ,হইচইয়ের সাথে কাজ করে যাচ্ছেন।

গল্প সংকটের প্রসঙ্গে চঞ্চল একেবারেই হতোদ্যম নন। স্ট্রিমিং সাইটের বদৌলতে দর্শক আরও নতুন ধারার এবং বিশ্বাস্য গল্প পাবে বলেই তাঁর ধারণা।

মনপুরার সোনাই কিংবা তাকদীর ওয়েব সিরিজ এর ফ্রিজার ভ্যান চালক তাকদীর অথবা সেই আয়নাবাজির শরাফত আলী আয়না- এই চরিত্রগুলোয় অবলীলায় মিশে যান তিনি। তবে নিজেকে স্বভাব অভিনেতা মানেন না সদা বিনয়ী এই অভিনেতা। স্ব অভিজ্ঞতা, বাস্তব বুদ্ধি, পর্যবেক্ষণ অর্থাৎ সব মিলিয়ে হোমওয়ার্ক সেরেই মাঠে নামেন। ফুটপাতের চা ওয়ালা থেকে হকার কারো অভিব্যক্তিই এড়ায় না, বরং এদের কাছ থেকেই শিখে নেন বাস্তবতার কারিকুরি।

গ্রামীণ চরিত্রে কীভাবে মিশে যান এত সহজে? বিপাশার প্রশ্নে নিজস্ব অভিজ্ঞতার কথাই তুলে আনেন চঞ্চল। বলেন, ‘কলেজ জীবন পর্যন্ত গ্রামেই বড় হয়েছি। তাই সেই গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষগুলোকে শুধু চোখে দেখা না, তাদের জীবনটাকে আমার মন দিয়ে, হৃদয় দিয়ে অনুভব করি। আর নগর জীবনটা অনেক স্ট্রাগলের ভেতর দিয়ে আমার অনুভব করা।‘

প্রতি মাসে মোটে ছুটি মেলে দুই থেকে তিন দিন। যদিও বিগত লকডাউনের বেশ কয় মাস ব্যপ্তি ছিল, সেই ফাঁকে পরিবারকেও দিয়েছেন অগাধ সময়। কিন্তু সেই সময় স্বল্পতার জন্য কখনোই পারফরম্যান্স ক্ষতির মুখে পড়েনি চঞ্চলের। এর রহস্য কী?

পদ্মাপাড়ের এই তুখোড় অভিনেতা গল্পে গল্পে জানান সেই কৌশলের কথা। ভীষণই আত্মভোলা তিনি। বছর কয় আগে কার সাথে কী নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয়েছিল তা বেমালুম ভুলে যান সহজেই। আর সেই কৌশলটাই কাজে লাগান মঞ্চে বা ক্যামেরার সামনে। এক নাটকের শ্যুটিং শেষ হলেই ভুলে যান চরিত্রের কথা আর গভীরতা। ফলে পরবর্তী চরিত্রে মনোনিবেশ করতে বেগ পেতে হয় না।

তবে পরিচালকের দায়িত্বকেই সবচেয়ে প্রাধান্য দেন তিনি। তাঁর মতে, অভিনেতারা হল কাদামাটি, পরিচালক চাইলে তা দিয়ে ফুলদানিও বানাতে পারেন, আবার বদনার আকৃতিও দিতে পারেন। তাই কাজ বের করবার জন্য অভিজ্ঞ-দক্ষ পরিচালকের চাহিদাটাই সবচেয়ে বেশি।

আরণ্যক নাট্যগোষ্ঠী থেকে উঠে এসেছেন তিনি, অভিনয়ের হাতেখড়ি হয়েছে একরাশ প্রতিভাধর ব্যক্তিত্বের হাত ধরে। অথচ বর্তমান টেলিভিশন নাটক নিয়ে নিরাশই অনেকটা। বিশেষত যেসব অভিনেতা একেবারেই নিজেদের ভাঙতে জানেন না, এক ধাঁচের কাজ গড্ডলিকা প্রবাহে বিনা শ্রমে করে যান- তাদের নির্লিপ্ততা পীড়া দেয় তাঁর মত মেথড অভিনেতাকে।

তবুও ভালোবাসা, আন্তরিকতা আর বিশ্বাস এই তিনকে এক সূত্রে গেঁথেই কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।

লিখেছেন- সারাহ তামান্না

হইচই প্ল্যাটফর্মে তাকদীর ওয়েব সিরিজ দেখার লিংক- তাকদীর ওয়েব সিরিজ

ফ্রিতে তাকদীর ওয়েব সিরিজ দেখার লিংক- তাকদীর ওয়েব সিরিজ