আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ও বাংলাদেশ রচনাটি পরীক্ষায় নানা নামে আসতে পারে। যেমন- তথ্য প্রযুক্তি ও বাংলাদেশ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ, বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব, বাংলাদেশের তথ্য ও প্রযুক্তির সম্ভাবনা।
আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ও বাংলাদেশ
ভূমিকাঃ
আজকের বিজ্ঞানই হলো পরবর্তী দিনের প্রযুক্তি।
— এডওয়ার্ড টেলার
বর্তমানে পুরো বিশ্বকে বলা হয় “গ্লোবাল ভিলেজ”। আর এটি সম্ভব হয়েছে শুধু মাত্র তথ্য প্রযুক্তির কারণে। দৈনন্দিন জীবন থেকে শুরু করে চিকিৎসা, শিক্ষা সর্বক্ষেত্রে বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার লক্ষণীয়। বাংলাদেশের মতো মধ্যম আয়ের দেশের জন্য তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর সেক্টরগুলোতে বিনিয়োগ চ্যালেঞ্জ হলেও সাবমেরিন ক্যাবলের সাথে সংযুক্তি বাংলাদেশকে যোগ করেছে আধুনিক বিশ্বের উন্নত প্রযুক্তির সাথে৷ উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হলে তথ্য প্রযুক্তিতে উন্নয়নের কোন বিকল্প নেই।
তথ্য প্রযুক্তি কিঃ
“Technology just means information technology” – Peter Thiel
মূলত তথ্য সংগ্রহ ও ব্যবহার Information Technology (IT) বা তথ্য প্রযুক্তি নামে পরিচিত। আরেকটু বিশদভাবে বলতে গেলে কম্পিউটার, ইন্টারনেট, টেলিযোগাযোগের মাধ্যমে তথ্য সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনা, প্রক্রিয়াকরণ এবং সরবরাহের জন্য ব্যবহৃত প্রক্রিয়া ও পদ্ধতির মিলিত ও সুশৃঙ্খল রূপ তথ্য-প্রযুক্তি নামে পরিচিত। মাইক্রো ইলেকট্রনিক্স, টেলিকমিউনিকেশন, ডাটাবেস উন্নয়ন, কম্পিউটিং, ডিশ অ্যান্টেনা, তথ্যভান্ডার, নেটওয়ার্ক, সফটওয়্যার উন্নয়ন, মুদ্রণ ও রিপ্রােগ্রাফিক ইত্যাদিকে তথ্য-প্রযুক্তির উল্লেখযোগ্য দিক হিসেবে গণ্য করা হয়৷
তথ্য-প্রযুক্তির ধরণ ও বৈশিষ্ট্যঃ তথ্য প্রযুক্তিকে বর্তমানে আলাদিনের জাদুর প্রদীপের সাথে তুলনা করলে খুব একটা ভুল হবে না। তথ্য-প্রযুক্তির উন্নয়নের সুফল আজ সর্বস্তরের মানুষের কাছে পৌঁছে গেছে। তথ্য প্রযুক্তির উল্লেখযোগ্য কিছু বৈশিষ্ট্য নিম্নে উল্লেখ করা হলোঃ
১. পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে ছবি, তথ্য-আদান প্রদান এক সময় নিতান্তই কল্পনা হলেও আজ তা বাস্তব রূপ পেয়েছে শুধুমাত্র তথ্য-প্রযুক্তির উন্নয়নের কারণে।
২. বর্তমানে, ইন্টারনেটের মাধ্যমে ঘরে বসেই বিভিন্ন দেশের কোম্পানির সাথে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে।
৩. ইন্টারনেটের কল্যাণে বিশ্বের অনেক নামী-দামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত হয়ে শিক্ষাগ্রহণ সম্ভব হচ্ছে।
বাংলাদেশ ও তথ্য প্রযুক্তিঃ যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ তার ও টেলিযোগাযোগ বোর্ড HF প্রযুক্তি ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক টেলিফোন সেবা প্রদান করতো। কিন্তু এই টেলিসেবার সক্ষমতা ছিল সীমাবদ্ধ। ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন শেখ মুজিবুর রহমান রাঙ্গামাটি জেলার কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়ায় দেশের প্রথম ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র চালু করেন। পরবর্তীতে, তালিবাবাদ, মহাখালী ও সিলেটে ৩ টি ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। ৯০ দশকের পর ভি-স্যাটের ব্যবহার উন্মুক্ত ছিল তথ্য প্রযুক্তি সেক্টরে নতুন দিক উন্মোচন।
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অর্জনগুলোর একটি হচ্ছে পুরো দেশব্যাপী ইন্টারনেটের প্রসার। গ্রামাঞ্চল থেকে শহর, অনেক ক্ষেত্র বর্তমানে ইন্টারনেট নির্ভর। কোভিডের কারণে লকডাউন চলাকালীন পুরো শিক্ষাব্যবস্থা ছিল ইন্টারনেট নির্ভর। এমনকি অনেক অফিসে কাজ হতো অনলাইনে। এ থেকে বোঝা যায় পুরো বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশে তথ্য প্রযুক্তি অনেক ধাপ এগিয়ে গেছে। তবে, ইন্টারনেটের গতি নিয়ে এখনো অনেক ভোক্তার অভিযোগ আছে। তাছাড়া, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ও মোবাইল ডাটার ক্ষেত্রে সরকারের একটি নির্দিষ্ট দাম বেঁধে দেওয়ার নীতি প্রণয়ন এখন সময়ের দাবী।
বাংলাদেশ ও তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারঃ বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নয় বছর আগেও দেশে ইন্টারনেট গ্রাহকের সংখ্যা ছিল ১২ লাখ। বর্তমানে, সে সংখ্যা সাড়ে ৪ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। তথ্য প্রযুক্তির কারণে দূরত্ব কমেছে, অনেক নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। অনেক অফিসের কাজ বর্তমানে সম্পূর্ণ তথ্য-প্রযুক্তি নির্ভর। তথ্য প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ গুরুত্ব অনুধাবন করে বর্তমানে পাঠ্যক্রমে কম্পিউটার শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে৷ সরকার বিনামূল্যে প্রত্যেক জেলায় কম্পিউটার শিক্ষার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করেছে৷ বর্তমানে এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সংখ্যা প্রায় ৭-৮ হাজার। রাজধানীতে বর্তমানে শতাধিক সফটওয়্যার কোম্পানি ও ৫ শতাধিক হার্ডওয়্যার প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও তথ্য প্রযুক্তিঃ পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় এখনো আমরা তথ্য প্রযুক্তি খাতে অনেকটা পিছিয়ে আছি। আমাদের দেশের তথ্য প্রযুক্তি এখানো অন্যান্য দেশের উপর নির্ভরশীল। দেশের তথ্য-প্রযুক্তি খাতের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে বাইরের দেশের প্রযুক্তিবিদদের নিয়োগ দেওয়া হয়। এর কারণ শিক্ষাখাতের মানের সেভাবে কোন উন্নতি না হওয়া। আর কম্পিউটার শিক্ষা বা অন্যান্য প্রযুক্তির সাথে সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করার সুযোগ থাকলেও বাস্তবে সে জ্ঞান প্রয়োগের ক্ষেত্র দেশে এখনো নেই বলবেই চলে। ফলে মেধাবীরা পাড়ি জমায় বিদেশে। তবে আশার কথা হচ্ছে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৮০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সফটওয়্যার রপ্তানি করেছে। এথেকে বোঝা যায় তথ্য-প্রযুক্তি সেক্টরের উন্নতি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে তথ্য প্রযুক্তির ভূমিকাঃ বেকারত্ব সমস্যা আমাদের দেশের প্রধান সমস্যা গুলোর মধ্যে একটি। তবে বর্তমানে অনেক তরুণ-তরুণী পেশা হিসেবে ফ্রিল্যান্সিংকে বেছে নিচ্ছে। এতে বেকারত্বের সমস্যা যেমন সমাধান হয় তেমনি সরকারি কোষাগারে রেমিট্যান্স জমা হয়। তাছাড়া, আমাদের দেশে এখনো নারীদের সেভাবে বাইরে এসে কাজ করতে দেখা যায় না। এটি প্রধান কারণ সামাজিক অবকাঠামো। অনেক নারী বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিংকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে। তাছাড়া, সামাজিক যযোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে অনেকে অনলাইন ব্যবসার সাথে যুক্ত হচ্ছে।
কৃষিক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির ভূমিকাঃ কৃষকেরা আমাদের অন্নদাতা। কৃষিপ্রধান এই দেশে কৃষকেরা দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে ফসল ফলালেও কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে তারা তাদের ফসলের ন্যায্য মূল্য পায় না। এই সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে সরকার এমন একটি অ্যাপ চালু করেছে যেটি ব্যবহারের মাধ্যমে তারা সরাসরি সরকারের কাছে ফসল বিক্রি করতে পারবে। এটি সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র তথ্য প্রযুক্তির কারণে। তাছাড়া ইন্টারনেটের কল্যাণে বর্তমানে কৃষকেরা বাইরের দেশে কৃষি কাজে ব্যবহৃত প্রযুক্তি সম্পর্কে অবগত হতে পারছে। তাছাড়া শুধুমাত্র ইন্টারনেট ব্যবহার করে নিজেদের উৎপাদিত পণ্য সারাদেশে বিক্রয় করা সময়ের ব্যাপার মাত্র৷
চিকিৎসাক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির ভূমিকাঃ চিকিৎসা ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে৷ ধরুন, কোন রোগী দেশের বাইরে গেলো চিকিৎসার জন্য। তাকে ছয় মাস পর আবার সে দেশে যেতে হলো চিকিৎসার জন্য। উন্নত দেশগুলোতে রোগীর কখন চিকিৎসা নিতে এসেছিল, কোন ডাক্তারের কাছ থেকে চিকিৎসা নিয়েছিল সব তথ্য তাদের সার্ভারে জমা থাকে। এতে সময় সাশ্রয়ের পাশাপাশি ভুল চিকিৎসার সম্ভাবনা কমে যায়। তাছাড়া তথ্য প্রযুক্তির কল্যাণে বর্তমানে আমরা ওয়েব পোর্টাল থেকে কোভিড টিকা করণের সার্টিফিকেট ডাউনলোড করতে সক্ষম হচ্ছি। বর্তমানে যে কোন সময় বিভিন্ন অ্যাপস ব্যবহার করে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া যায়। এতে করে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষেরা উন্নত চিকিৎসা পরামর্শ গ্রহণ করতে পারে৷
সফটওয়্যার শিল্প ও তথ্য প্রযুক্তিঃ সফটওয়্যার শিল্পে বাংলাদেশ অনেকটা পিছিয়ে থাকলেও বর্তমানে দেশের ১৬ শতাংশ সফটওয়্যার ফার্ম তাদের ডেভেলপ করা সফটওয়্যার বিদেশে রপ্তানি করছে৷ এতে করে দেশের তথ্য প্রযুক্তি সেক্টরের উন্নয়নের পাশাপাশি রপ্তানি আয়ও বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ দেশের শিক্ষা ও বিনোদনের কম্পিউটার ভিত্তিক মাল্টিমিডিয়ার বাজারের প্রসার চোখে পড়ার মতো।
ই-ব্যাংকিং ও মোবাইল ব্যাংকিংঃ বর্তমানে, বাংলাদেশের সব ব্যাংক ই-ব্যাংকিং সুবিধার আওতায় চলে এসেছে। দেশের যেকোন ব্যাংকের শাখা থেকে আজকাল গ্রাহকেরা তাদের কাঙ্খিত শাখায় টাকা জমা ও টাকা উত্তোলন করতে পারে। মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ ব্যাংকিং এর সুফল ভোগ করতে পারছে। টাকার আদান-প্রদান বর্তমানে মিনিটের ব্যাপার মাত্র। ২০২০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৬৩ হাজার কোটি টাকা।
গবেষণা ও তথ্য প্রযুক্তিঃ বর্তমানে, গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য মুহূর্তের মধ্যেই সংগ্রহ করা যায়। এটি সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র তথ্য-প্রযুক্তির কল্যাণে। এক সময় গবেষণা সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা ও প্রয়োজনীয় তথ্যাদি সংগ্রহের জন্য বিদেশ গমন করতে হলেও বর্তমানে ইন্টারনেটের মাধ্যমে সহজেই বিভিন্ন দেশের গবেষকদের সাথে যোগাযোগ করা যায়। তাছাড়া বিভিন্ন দেশের গবেষকদের নির্দেশনা অনুসরণ করে নিজেদের গবেষণায় সেটির ব্যবহার তুলনামূলক ফলপ্রসূ।
মানবসম্পদ উন্নয়ন ও তথ্য প্রযুক্তিঃ বর্তমানের প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে কোন দেশকে এগিয়ে থাকতে হলে সর্বপ্রথম শর্ত হলো দেশের জনগোষ্ঠীকে দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করা। আমাদের দেশে কোন বৃহৎ স্থাপনা নির্মাণে বাইরের দেশে থেকে জনবল নিয়োগ করতে হয়। এটির একমাত্র কারণ দেশে এখনো দক্ষ জনবলের অভাব রয়েছে। তথ্য প্রযুক্তি ব্যক্তিগত দক্ষতা বাড়াতে অনেক সহায়তা করে। যেমন, অ্যাপের সাহায্যে ইংরেজি ভাষাসহ বিভিন্ন ভাষা রপ্ত করা যায়। কম্পিউটার কোর্স, বিভিন্ন ধরনের স্কিল ডেভেলপিং কোর্স করা যায়।
তথ্য প্রযুক্তির বিকাশে সরকারের ভূমিকাঃ দেশকে “ডিজিটাল বাংলাদেশ ” হিসেবে গড়ে তুলতে বর্তমান সরকারের ভূমিকা সত্যি প্রশংসনীয়। সরকার দেশের তথ্য-প্রযুক্তি সেক্টরের অগ্রগতির জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। যেমনঃ
১. তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়নের জন্য গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ২৬৫ একর জমির ওপর হাইটেক পার্ক স্থাপন করা হয়েছে।
২. দেশের প্রতিটি স্কুলে কম্পিউটার ল্যাব ও মাধ্যমিক স্কুল পর্যায়ে কম্পিউটার শিক্ষা কোর্স অন্তর্ভুক্তির পাশাপাশি কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের জন্য আইসিটি ইন্টার্নশীপ’ কর্মসূচি চালু করা হয়েছে।
৩. বাংলাদেশ থেকে সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট পণ্য বিদেশে বাজারজাতকরণের লক্ষ্যে বর্তমান বাংলাদেশ সরকার ‘আইসিটি বিজনেস প্রমােশন সেন্টার স্থাপন করেছেন।
৪. বাংলাদেশ সরকার তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশে জাতীয় যােগাযােগ ও তথ্যপ্রযুক্তি নীতিমালা অনুমােদন করে ঢাকার কারওয়ান বাজারে।
৫. ৭০ হাজার বর্গফুট এলাকা জুড়ে অত্যাধুনিক সুযােগ-সুবিধা সংবলিত একটি আইসিটি ইনকিউবেটর’ স্থাপন করেছে ।
বাংলাদেশে তথ্য প্রযুক্তি উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতাঃ বাংলাদেশের মত মধ্যম আয়ের দেশে তথ্য-প্রযুক্তি সেক্টরে উন্নয়ন বেশ কঠিন চ্যালেঞ্জ। এই সেক্টরে পিছিয়ে থাকার সর্বপ্রথম কারণ হচ্ছে দক্ষ জনবলের অভাব। এই সেক্টরে উন্নতির জন্য দক্ষ জনবল তৈরির পাশাপাশি বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। প্রয়োজনে বাইরের দেশকে উৎসাহিত করতে হবে দেশে বিনিয়োগের জন্য। শেয়ার মার্কেটে আইটি কোম্পানির অংশগ্রহণ নিশ্চিত দেশের তথ্য-প্রযুক্তির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
বাংলাদেশ ও তথ্য প্রযুক্তি খাতে সম্ভাবনাঃ অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্ম কোরসেরার বৈশ্বিক দক্ষতা সূচক বা ‘গ্লোবাল স্কিলস ইনডেক্স ২০১৯’ (জিএসআই) অনুযায়ী, প্রযুক্তিগত দক্ষতার দিক থেকে অপারেটিং সিস্টেম, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মতো ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতি চোখে পড়ার মতো। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) খাতে বাংলাদেশের বর্তমান রপ্তানি আয় ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে।
উপসংহারঃ বর্তমানে প্রায় সব সেক্টর প্রযুক্তি নির্ভর। যেকোন দেশের উন্নয়ন অনেকাংশে তথ্য-প্রযুক্তির উপর নির্ভরশীল। দেশের দারিদ্র্য দূরীকরণ, বেকারত্ব নিরসনে প্রযুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। উন্নত দেশগুলো প্রায় প্রতিটি কাজ রোবট দিয়ে করানো হয়। এমনকি অনেক দেশ ইতোমধ্যে ড্রাইভারবিহীন গাড়ির সূচনা করেছে। এটি সম্ভব হচ্ছে শুধুমাত্র তথ্য-প্রযুক্তির কল্যাণে। আমাদের দেশ এখনো এই সেক্টরে অনেকাংশে পিছিয়ে থাকলেও তথ্য-প্রযুক্তি সেক্টরে বাংলাদেশের উন্নতি ঈর্ষণীয়। এ ধারা অব্যাহত থাকলে খুব শীঘ্রই আমাদের “ডিজিটাল বাংলাদেশ” গড়ে তোলার লক্ষ্য অর্জিত হবে।
আরও পড়ুন- বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও তাঁর প্রতিকার
আরও পড়ুন- রচনা: আমার প্রিয় শিক্ষক
আরও পড়ুন- রচনাঃ স্বদেশপ্রেম (২১ পয়েন্ট)
আরও পড়ুন- চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিজ্ঞান / চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের অবদান