আমরা সবাই বসবাস করি পৃথিবী নামক একটি গ্রহে। চাঁদ পৃথিবীর একটি উপগ্রহ। আর আমাদের পৃথিবীকে ঘিরে রয়েছে অসংখ্য কৃত্রিম উপগ্রহ। কিন্তু গ্রহ, উপগ্রহ ও কৃত্রিম উপগ্রহকে কীভাবে বইয়ের সংজ্ঞায়িত করা হয় সেটিই আমরা জানবো এই লেখায়।
গ্রহ, উপগ্রহ ও কৃত্রিম উপগ্রহ কাকে বলে?
গ্রহ (Planet): মহাকাশে কতগুলো জ্যোতিস্ক সূর্যকে ঘিরে নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট পথে পরিক্রমণ করে। এই সব জ্যোতিস্কের নিজেদের কোন আলো বা তাপ নেই। সূর্যের মহাকর্ষ বলের প্রভাবে এরা সূর্যকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়। এরা সূর্য থেকে আলো, তাপ পায় ও প্রয়োজনীয় শক্তি পায়। এরা তারার মতো মিটমিট করে জ্বলে না। এসব জ্যোতিস্ককে গ্রহ বলে।
আমাদের সৌরজগৎ এ গ্রহের সংখ্যা মোট আটটি। অর্থাৎ সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরছে আটটি গ্রহ। একটা সময় পর্যন্ত প্লুটোকে গ্রহ হিসেবে ধরা হলেও প্লুটোকে এখন বামন গ্রহ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সূর্য থেকে দূরত্ব অনুযায়ী গ্রহগুলোর অবস্থান হলো- বুধ (Mercury), শুক্র (Venus), পৃথিবী (Earth), মঙ্গল (Mars), বৃহস্পতি (Jupiter), শনি (Saturn), ইউরেনাস (Uranus) এবং নেপচুন (Neptune)।
সৌরজগৎ এর গ্রহগুলো নিয়ে যারা বিস্তারিত জানতে আগ্রহী তারা এই লেখাটি পড়ে দেখতে পারেন- সৌরজগৎ কি? সৌরজগৎ এর গ্রহ কয়টি ও এদের বর্ণনা
উপগ্রহ (Satellite): কিছু কিছু জ্যোতিস্ক সূর্যকে নয় বরং কোন গ্রহকে ঘিরে আবর্তিত হয়, এদের উপগ্রহ বা চাঁদ বলা হয়। গ্রহের মহাকর্ষ বলে প্রভাবে এরা গ্রহকে কেন্দ্র করে ঘোরে। এদের নিজস্ব কোন আলো বা তাপ নেই। গ্রহগুলোর মতো এরাও সূর্য বা নক্ষত্র থেকে আলো বা তাপ পায়। চাঁদ পৃথিবী গ্রহের একমাত্র উপগ্রহ। সব গ্রহেরই যে উপগ্রহ থাকে, ব্যাপারটি এমন নয়। আমাদের সৌরজগতের বুধ ও শুক্র গ্রহের কোন উপগ্রহ নেই। তবে বিজ্ঞান যতই উন্নত হচ্ছে নতুন নতুন উপগ্রহ আবিস্কারের সংখ্যাও সেই সাথে বাড়ছে।
কৃত্রিম উপগ্রহ: আদম্য কৌতুহলী মানুষ নিজেদের প্রয়োজনের বানিয়েছে কৃত্রিম উপগ্রহ। মানুষের তৈরি এই সব উপগ্রহ পৃথিবীর মহাকর্ষ বলকে কাজে লাগিয়ে পৃথিবীর চারিদিকে ঘুরছে। মানুষের তৈরি এই সব উপগ্রহকেই কৃত্রিম উপগ্রহ বলে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস, নিজেদের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান, গোয়েন্দা নজরদারি, খনিজ সম্পদের সন্ধান, ইন্টারনেট ব্যবহার, পরিবেশ দূষণ নির্ণয় এমন অনেক কাজেই কৃত্রিম উপগ্রহ ব্যবহার করা হয়।
আরও পড়ুন- প্লুটো কেন গ্রহ নয়?